❑ খাওলা নাম্নী একজন জাপানী নারী গত ২৫/১০/১৯৯৩ তারিখে সউদি আরবের আল কাসীম বুরাইদা শহরের ইসলামি সেন্টারে এসে ইসলাম গ্রহণ ও পর্দার সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তা থেকে সংক্ষেপে কিছু কথা এখানে উল্লেখ করা হল:
তিনি ফ্রান্সে অবস্থানকালে ইসলাম গ্রহণ করেন। তারপর থেকে ইসলামি জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখেন। তিনি বলেন, ইসলাম গ্রহণ করার পর পর্দার মধ্যে আমি খুবই আনন্দ ও গৌরব করতে লাগলাম। কেননা পর্দা শুধু আল্লাহর আনুগত্যের প্রতীকই নয়; উপরন্তু তা মুসলিম নারীদের মাঝে আন্তরিকতার বাঁধন। পর্দার মাধ্যমে আমি নিজেকে অত্যন্ত ভদ্র ও সম্মানিত মনে করি।
তিনি বলেন, অনেক নারী এমন পোশাক পরেন যাতে তাদের স্তন ও নিতম্বের আকৃতি পরিষ্কার ফুটে উঠে। ইসলাম গ্রহণের আগেও আমি এধরণের পোশাক দেখলে অস্বস্তি বোধ করতাম। আমার মনে হত এমন কিছু অঙ্গ প্রদর্শন করা হচ্ছে যা মূলত: ঢেকে রাখা উচিত, বের করা উচিত নয়। একজন মেয়ের মনে যদি এসকল পোশাক এ ধরণের অস্তিত্ব বোধ এনে দেয় তাহলে একজন পুরুষ এ পোশাক পরা মেয়েদের দেখলে কীভাবে প্রভাবিত হবেন তা সহজেই অনুমান করা যায়।
তিনি বলেন, আপনি যদি কোন কিছু লুকিয়ে রাখেন তাহলে তার মূল্য বেড়ে যায়। এমনকি অন্য নারীর চোখেও তা অধিকতর আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। পর্দানশীন বোনদের কাঁধ ও গলা অপূর্ব সুন্দর দেখায়, কারণ তা সাধারণত: আবৃত থাকে। যখন কোন মানুষ লজ্জার অনুভূতি হারিয়ে নগ্ন হয়ে রাস্তা-ঘাটে চলতে থাকে, প্রকাশ্য জনসমক্ষে পেশাব, পায়খানা ও যৌনতা করতে থাকে, তখন সে পশুর সমান হয়ে যায়, তাকে আর কোনভাবেই পশু থেকে পৃথক করা যায় না। আমার ধারণা, লজ্জার অনুভূতি থেকেই মানব সভ্যতার শুরু।
অনেকে প্রশ্ন করতে পারে, পুরুষকে উত্তেজিত না করার উদ্দেশ্যে নারীর সমস্ত শরীর ঢেকে রাখাটা বাড়াবাড়ি এবং অতি-সতর্কতা। একজন পুরুষ কি শুধুমাত্র যৌন আগ্রহ নিয়েই একজন নারীর দিকে তাকায়? একথা ঠিক যে সব পুরুষই প্রথমেই যৌন অনুভূতি নিয়ে নারীকে দেখে না। তবে নারীকে দেখার পর তার পোশাক ও আচরণ থেকে পুরুষের মনে যে যৌন আগ্রহ সৃষ্টি হয় তা প্রতিরোধ করা তার জন্য খুবই কষ্টকর। এধরণের আবেগ নিয়ন্ত্রণে পুরুষরা বিশেষভাবে দুর্বল। বর্তমান বিশ্বের ধর্ষণ ও যৌন অত্যাচারের পরিমাণ দেখলেই আমরা একথা বুঝতে পারব। নারী-পুরুষের সম্মতি মুলক ব্যভিচার বৈধ করার পরও পাশ্চাত্যে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও যৌন অত্যাচারের ঘটনা ধারণাতীত ভাবে বেড়ে চলছে।
◈ একজন নও মুসলিম নারীর দৃষ্টিতে ইসলামী হিজাব:
অনেকে প্রশ্ন করতে পারে, পুরুষকে উত্তেজিত না করার উদ্দেশ্যে নারীর সমস্ত শরীর ঢেকে রাখাটা বাড়াবাড়ি এবং অতি-সতর্কতা। একজন পুরুষ কি শুধুমাত্র যৌন আগ্রহ নিয়েই একজন নারীর দিকে তাকায়? একথা ঠিক যে সব পুরুষই প্রথমেই যৌন অনুভূতি নিয়ে নারীকে দেখে না। তবে নারীকে দেখার পর তার পোশাক ও আচরণ থেকে পুরুষের মনে যে যৌন আগ্রহ সৃষ্টি হয় তা প্রতিরোধ করা তার জন্য খুবই কষ্টকর। এধরণের আবেগ নিয়ন্ত্রণে পুরুষরা বিশেষভাবে দুর্বল। বর্তমান বিশ্বের ধর্ষণ ও যৌন অত্যাচারের পরিমাণ দেখলেই আমরা একথা বুঝতে পারব। নারী-পুরুষের সম্মতি মুলক ব্যভিচার বৈধ করার পরও পাশ্চাত্যে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও যৌন অত্যাচারের ঘটনা ধারণাতীত ভাবে বেড়ে চলছে।
যারা বেপর্দা হয়ে চলতে ভালবাসেন এবং সেটাকেই সভ্যতা মনে করেন, তাদেরকে আমি প্রশ্ন করব: আপনি কি একজন নুডিস্ট বা নগ্ন বাদী? আপনি কি নগ্ন হয়ে চলাফেরা করেন? যদি আপনি নুডিস্ট না হন তাহলে বলুন, যদি কোন নুডিস্ট আপনাকে জিজ্ঞেস করেন: কেন আপনি আপনার স্তন ও নিতম্ব ঢেকে রাখেন, অথচ মুখ ও হাতের ন্যায় স্তন ও নিতম্বও তো শরীরের স্বাভাবিক অংশ? তাহলে আপনি কি বলবেন? এ প্রশ্নের উত্তরে আপনি যা বলবেন, আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমি ঠিক সেকথাই বলব। আপনি যেমন শরীরের স্বাভাবিক অংশ হওয়া স্বত্বেও স্তন ও নিতম্বকে গোপনীয় অঙ্গ বলে মনে করেন, আমরা মুসলিম নারীর সমস্ত শরীরকে গোপনীয় অঙ্গ বলে মনে করি, কারণ মহান স্রষ্টা আল্লাহ এভাবেই আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। আর এজন্যই আমরা নিকটাত্মীয় (মাহরাম) ছাড়া অন্যান্য পুরুষদের থেকে সম্পূর্ণ শরীর আবৃত করে রাখি।(খন্দকার আবু নসর মুহাম্মদ আবদুল্লাহ্ জাহাঙ্গীর অনুদিত শাইখ বিন বায রাহ. প্রণীত ইসলামি হিজাব বা পর্দা পুস্তক থেকে সংকলিত।)